জিপি নিউজঃ জাপানের বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের দক্ষ কর্মী নিয়োগের উদ্দেশ্যে জাপান সরকারের সাথে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) দক্ষ কর্মী প্রেরণকারী নবম দেশ হিসাবে বাংলাদেশ জাপানের সাথে সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে বলে ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
স্থানীয় সময় বেলা ১২টায় টোকিওতে জাপানের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য, শ্রম ও কল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, জাপানের জাতীয় পরিকল্পনা এজেন্সি এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মধ্যে এই সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। উভয় পক্ষ এ সময় কর্মী প্রশিক্ষণ ও নিয়োগে পারস্পরিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করেন।
এর ফলে ১৪টি খাতে বিশেষায়িত দক্ষ শ্রমিক জাপানে পাঠানোর সুযোগ তৈরি হল। আগামী পাঁচ বছরে সাড়ে তিন লাখ বিদেশি কর্মী নেবে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত এ দেশটি। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতেও এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে আটটি দেশের নাম দক্ষ কর্মী প্রেরণকারী দেশের তালিকায় ওঠে। দেশগুলো হল- ভিয়েতনাম, চীন, কম্বোডিয়া, মিয়ানমার, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড ও পূর্ব এশিয়ার অন্য একটি দেশ। দুটি ক্যাটাগরিতে কেয়ার ওয়ার্কার, বিল্ডিং ক্লিনিং ম্যানেজমেন্ট, মেশিন পার্টস ইন্ডাস্ট্রিজ, ইলেকট্রিক, ইলেক্ট্রনিক্স, কনস্ট্রাকশন, জাহাজ শিল্প, অটোমোবাইল, কৃষিসহ ১৪টি খাতে বিশেষভাবে দক্ষ ও জাপানি ভাষায় পারদর্শী কর্মীদের নিয়োগ দেবে জাপান।
বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান এবং জাপানের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন ইমিগ্রেশন সার্ভিস এজেন্সির কমিশনার মিজ সোকো সাসাকি নিজ নিজ দেশের পক্ষে চুক্তি স্বাক্ষর প্রদান করেন।
এসময় জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মিজ রাবাব ফাতিমা, জাপানের পলিসি প্লানিং ডিভিশনের ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফায়ারস দপ্তরের পরিচালক ইয়াসুয়াকি ইমাই, বাংলাদেশের প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মো. জাহাঙ্গীর আলম, উপসচিব কাজী আবেদ হোসেন বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম কাউন্সেলর ও দুদেশের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহান বলেন, “সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে নির্দিষ্ট কিছু শর্তসাপেক্ষে জাপানে দক্ষ কর্মী প্রেরণের সুযোগ সৃষ্টি হবে যা দুই দেশের জন্যই লাভজনক হবে। বাংলাদেশ সরকার জাপানের চাহিদাকে বিবেচনায় রেখে দক্ষ কর্মী তৈরিতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।”
সচিব জানান, ইতোমধ্যে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সারা দেশে ২৬টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের মাধ্যমে জাপানি ভাষায় ৪ মাস মেয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স চালু করেছে। এছাড়া বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও জাপানি ভাষা শিক্ষার বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
প্রথম ক্যাটাগরিতে জাপানিজ ভাষার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ও নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা থাকলে পরিবার ছাড়া জাপানে পাঁচ বছর পর্যন্ত কাজ করার সুযোগ পাবেন। আর দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে যাদের জাপানি ভাষা ও নির্দিষ্ট কাজে দক্ষতা প্রথম ক্যাটাগরির কর্মী থেকে বেশি তারা পরিবারসহ অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য কাজ করার সুযোগ পাবেন।